Wednesday, 15 December 2021
Thursday, 9 December 2021
Tuesday, 7 December 2021
Sunday, 5 December 2021
Monday, 18 October 2021
Saturday, 16 October 2021
Sunday, 10 October 2021
Saturday, 9 October 2021
Monday, 4 October 2021
পোস্টমডার্ন কবিয়ালি
সত্যি বলতে কী টুংটাং বাতাসের
ছায়া দিয়ে তৈরি গরম-গরম ফুলকো প্রাসাদে
ছলকে-ওঠা রোদ্দুরে তাকিয়ে থাকি, তবু
কেন যে দেখতে পাই না তা বিশদ লেখা ছিল
অর্শ সারাবার হ্যাণ্ডবিলের তুলতুলে ডানায়
যেগুলো হাতবদল-করা যাত্রার পোস্টকার্ডের কায়দায়
গাড়িগুলোকে পাশ কাটিয়ে-যাওয়া রাস্তায়
এমনভাবে পড়েছিল যেন এক বেহেড বরযাত্রী
যার কথা বরের বাবা বেমালুম ভুলে গেছেন
অথচ এমন তো আর নয় যে নীল জলের
সাঁতারু-মেয়েদের অতল থেকে জাপ্টে ধরার
বহুদিনের স্বপ্ন বরের মেসোর ছিল না
যাঁর তরুণ বয়সের সিটি-বাদক সুগলা
আজ পালটে গেছে উকিলের গলা-খাঁকারিতে
.
‘আঁকড়া সাজায়েচে ভালো মাকড়া রাম বাউল
দিয়ে এড়ুয়া বেঁকি নুপূর পায় ভেড়ুয়া যেন নেচে যায়
মেড়ুয়াবাদীর মতো ওটার মাথাভরা কোঁকড়া-চুল’
.
সত্যি বলতে কী কলকাতা শহরে
যে-মেয়েটি শেষ ঘুমোতে যায় তার
প্রেমে ক্ষয়ে-ক্ষয়ে বেহাল উডডামরা শরীরে
হেথা-হোথা আচারে ভেজানো টকমিষ্টি
চোখগুলো কিসের মতন ঠিক মনে পড়ছে না
আরে হ্যাঁ বরের মা একজনকে চিনতেন
যে চিনদেশের লাল টুকটুকে বই পড়ে
সেই যে হাটুরে কেরানিদের ঠ্যাঙদুলুনি দুপুরে
কোমরে গোধূলি জড়িয়ে উধাও হলো
ফিরেছিল অতিথি-মার্কা টেরিকাটা ঝড়ে
ভ্যান-রিকশায় চিৎ মাছি-ঢাকা মুচকি-ঠোঁটে
কী আর বলি মৃত্যুর মতন ইয়ার্কি আর নেই
মনে হয়েছিল একটু আগেই যখন বেচারা
বেচারত্বে জন্মাচ্ছিল তখন গাইছিল--
.
‘ময়মনসিংহের মুগ ভালো খুলনার ভালো কই।
ঢাকার ভালো পাতাক্ষীর বাঁকড়োর ভালো দই।।
কৃষ্ণনগরের ময়রা ভালো মালদার ভালো আম।
উলোর ভালো বাঁদরপুরুষ মুর্শিদাবাদের জাম।।
রংপুরের শশুর ভালো রাজশাহির জামাই।
নোয়াখালির নৌকা ভালো চট্টগ্রামের ধাই।।
দিনাজপুরের কায়েত ভালো হাওড়ার ভালো শুঁড়ি।
পাবনা জেলার বৈষ্ণব ভালো ফরিদপুরের ছুঁড়ি।।
বর্ধমানের চাষি ভালো চব্বিশ পরগণার গোপ।
গুপ্তিপাড়ার মেয়ে ভালো শ্রীঘ্র বংশলোপ ।।
হুগলির ভালো কোটাল-লেঠেল বীরভূমের ভালো বোল।
ঢাকির বাদ্যি থামলে ভালো হরি হরি বোল ।।
.
সত্যি বলতে কী ফাটা ডিমে বাবুই দম্পতির
কয়ের ডেকোরেটেড বেডরুম প্যাচপেচে
হয়ে থাকায় বরের মুটকি রাঙা-বউদি
ইষ্টনাম জপতে বসার জায়গা পেলেন না
এদিকে ওনার তর সইছিল না কেন না
বাঁ-হাতের মুঠোয় জমে গেছে দু-ডজন কন্ঠস্বর
যার এক-আধটায় মাকঢ়সার ওৎপাতা
একাকীত্ব থেকে ঠায় ভেসে আসছিল
ভাটিয়ে পুরুষের হাঙর-গান যেটা
বাসরঘরে গাইবেন বলে বরের মেজোকাকা
অবৈধ-ভ্রূণ হাতে আইবুড়ো রয়ে গেলেন
এইজন্য যে এক নৃত্যপটিয়সী বাদুড়
একখানা এমন জীবানুবাহী কথা বলেছিল
যা মানে করলে অনেকটা এরকম দাঁড়ায়--
.
‘কেমন করে বললি জগা জোড়া গোলক বৃন্দাবন
এখানে তো বামুন রাজা চাষা প্রজা চৌদিকে তার বাঁশের বন
জগা কোথা যে তোর শ্যামকুণ্ড কোথা রে তোর রাধাকুণ্ড
ওই সামনে আছে মানিককুণ্ড করগে মূলা দরশন’
.
সত্যি বলতে কী বর-শালা যতোই
ছিন্নমূল হোক না কেন তার শেকড় এমন
গজাবে যে সে নিজেই নট নড়ন-চড়ন ফুলশয্যায়
বাবরের আনা ডোরাকাটা তরমুজ খেয়ে
পোষমানা নদীর ল্যাজ আছড়ানির ধাক্কায়
ভাঁজখোলা ঘোড়াফড়িঙের সবুজ লাফ দেবে
মুখের মধ্যে সম্পাদিত কথাবার্তার কুচি
ট্রেনচাকার ফিনকিতোলা চিৎকার সেজে উড়বে
সে-রব যতই আঞ্চলিক ভাষায় হাত নাড়াক
ও তো জানে যে-গ্রহে নুন নেই সে-গ্রহে মানুষ নেই
তা যদি থাকতো তাহলে ওয়ালরাস-দেঁতো
বরের মামা কি নোংরাভাষিনীর টেলিফোনে
গায়ের তাপ বাড়াতে পয়সা ঢালতো
বরং যে-কোকিল দুপুর-রোদকে সুরে বাঁধে
বা যে ভবঘুরে কেন্নোর ঠ্যাংগুলো বাচাল
তাদের কাছ থেকে জেনে নিত কেন
মৌমাছি বসলেই ফুলেরা গন্ধ লুকোয়
আর মধু-ভাষায় কাঁদে----
.
‘শ্যাম আপনারো যেমন তৃভঙ্গ কালিয় ভূজঙ্গ কুটিলে।
কুবুজারো অঙ্গ রসেরো তরঙ্গ তাহাতে স্ত্রী অঙ্গ ডুবালে।।
শ্যাম এই ভূমণ্ডলে আধো গঙ্গাজলে রাধাকৃষ্ণ বলে নিদানে।
এখন কুঁজিকৃষ্ণ বোলে ডাকিবে সকলে ভূবনো তরাবে দুজনে ।।
শ্যাম তেজিলে শ্রীমতী তাহাতে কী ক্ষতি যুবতী সকলি সহিলো।
ভূজঙ্গ মাণিকো হরে নিলো ভেকো মরমে এ-দুখো রহিলো ।।
শ্যাম প্রদীপেরি আলো প্রকাশ পাইলো চন্দ্রমা লুকালো গগনে ।
ওহে গোখুরের জলে জগতো ব্যাপিলো সাগরো শুকালো তপনো।।
.
সত্যি বলতে কী মোষের ধন
দুইতে-দুইতে কর-রেখায় যেমন গ্রীষ্ম জমে
বাসের ছাদে বসে যাত্রীরা তেমন রাজনীতি
আলোচনা করছিল যে কেউটে খোলোস ছাড়লে
তার সঙ্গে গায়ের নকশাও তো ফেলে আসে
তাহলে কেন মিথ্যুকের পদচিহ্ণে থরহরি
মহাকরণের ভি আই পি লিফট চেপে
বর বললে কাস্তেটা শান দিও বন্ধু
জিগ্যেস করলে কমরেড তুমি নবযুগ আনবে না
পদ্যের কড়া হাতুড়িতে আজ হত্যে
হঠকারিতায় ভেঙে দাও ভীরু দ্বার
টোপর মাথায় বললে আগুন আমার ভাই
ব্যাস শোনা গেল টায়ার পাংচার কন্ঠস্বর--
.
‘আমারে ফ্রড করে কালিয়া ড্যাম তুই কোথা গেলি
আই অ্যাম ফর ইউ ভেরি সরি গোলডেন-বডি হলো কালী
হো মাই ডিয়ার ডিয়ারেস্ট মধুপুরে তুই গেলি খৃষ্ট
ও মাই ডিয়ার হাউ টু রেস্ট হিয়ার ডিয়ার বনমালী
শুনো রে শ্যাম তোরে বলি
পুওর কিরিচর মিল্ক গেরেল তাদের ব্রেস্টে মারলি শেল
ননসেন্স তোর নেইকো আক্কেল ব্রিচ অব কনট্র্যাক্ট করলি
ফিমেলগণে ফেল করালি
লম্পট শঠের ফরচুন খুলল মথুরাতে কিঙ হলো
আংকেলের প্রাণ নাশিল কুবুজার কুঁজ পেলে ডালি
নিলে দাসীরে মহিষী বলি
শ্রীনন্দর বয় ইয়ং ল্যাড কুরুকেড মাইন্ড হার্ড
কহে আর সি বার্ড এ পেলাকারড কৃষ্ণকেলি
হাফ ইংলিশ হাফ বাঙ্গালি’
.
সত্যি বলতে কী যে মেয়েটি
পাপড়ি ঝরার বয়সে এই সবে পৌঁছেচে
আঙুলের বদলে কথা দিয়ে ওর দরোজায়
টোকা দিতে বরের কুষ্ঠিঠিকুজি জুড়ে
ময়ূরের ঝর্ণাপেখম রিমঝিম হিমসিম
কেননা ফেশিয়াল-করা হাসিতে বললে
শীতঘুমের দিনগুলো ভালো ছিল গো
তা শুনে বরপার্টির সে কী আখড়াই-ধুম
ছিরিকেষ্ট ল্যাঙাশিবু ট্যারাহরি বেঁটেনারাণ
ঢ্যাঙাকাত্তিক কেলোগণশা তোতলাসতে--
কনে বেচারি পাশবালিশ জড়িয়ে যা শুনলে
তা বুড়ি থুথ্থুড়ি হলেও মনে রেখেছে--
.
‘১.চিতান ।। বালিকা ছিলাম ছিলাম ভালো ছিলাম সই---
ছিল না সুখ অভিলাষ ।
১.পরচিতান ।। পতি চিনতাম না, ও-রস জানতাম না
হৃৎপদ্ম ছিল অপ্রকাশ ।
১.ফুকা ।। এখন সেই শতদল মুদিত কমল কাল পেয়ে ফুটিল।
পদ্মের মধু পদ্মে রেখে ভৃঙ্গ উড়ে গেল ।
১.মেলতা ।। একে মদনের পঞ্চশর প্রাণনাথের বিচ্ছেদ শর
দুই শরে সারা হলো যুবতী….
মহড়া ।। আমার কুলের নাশক হলো রতিপতি
আমার প্রাণনাশক হলো প্রাণপতি
আমি অবলা বইতো নই
কী করি বলো সই
হয়েছি বিচ্ছেদে নতুন ব্রতী---
খাদ ।। উভসংকটে পড়ে সই হলো এ কী দুর্গতি ।
২.ফুকা ।। ও তার নামটি মদন…
গঠন কেমন দেখতে পাই না চোখে…
ইন্দ্রজিতের যুদ্ধ যেমন বান মারে কোথা থেকে ।
২.মেলতা ।। একে অর্ধরথী নারী তার সঙ্গে কি পারি
তাতে নাই আমার যৌবনরথের সারথি ল
অন্তরা ।। পোড়া মদন তো তাও সই বুঝে না ।
দেখে অবলা নারী তাতে যুবতী ।
আপন পতি হয়ে যদি বুঝলে না বেদনা…
২.চিতান।। জ্বালালে পতি হয়ে যদি নারীর প্রাণ
দোষ কি দিব মদনে ?
২.পরচিতান।। ঘুচে সব জ্বালা জুড়ায় অবলা
ত্যাজিলে এ পাপ জীবনে ।
৩.ফুকা ।। পোড়া যৌবন গেল
জীবন গেলে প্রাণ জুড়ায় গো সখি ।
নইলে জ্বালা জুড়াবার আর উপায় না দেখি।
৩.মেলতা।। আমার কুল রক্ষে মান রক্ষে সমভাবে দুপক্ষে
পাছে বিপক্ষে বলে আবার অসতী।।
.
সত্যি বলতে কী….
Friday, 1 October 2021
Monday, 20 September 2021
কায়েস মাহমুদ স্নিগ্ধ নোয়াখালির আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করেছেন "প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার"
Monday, 13 September 2021
Friday, 10 September 2021
Wednesday, 1 September 2021
Saturday, 28 August 2021
Six Haikus by Malay Roychoudhury translated by Arunava Sinha
Translated by Arunava Sinha
Friday, 27 August 2021
Wednesday, 18 August 2021
পুরোহিতহীনতার কবিত্ব
পুরোহিতহীনতার কবিত্ব
মলয় রায়চৌধুরী
রশ্মির স্বাহা কয়েকটা উড়ছিল
নাভির চর্বিতে আগুন ধরিয়ে
পাঁজর ফাটার শব্দ
প্রচুর গাওয়া-ঘি মাখানো সুন্দরী
চন্দন মাখানো কান-নাক-চোখে ছোঁয়াবার সোনা
কবি তিন বার তোমাকে পাক দিচ্ছিলেন
নুটির আগুন
পোশাক বদলের হিন্দু সময় নেই
এক লিটার সিলবন্ধ গঙ্গাজল
খড়ের পালঙ্ক কে জানে কোন কাঠ
চামড়া পোড়া গন্ধের মোহক
ভেবো না যে কাঁদছেন কবি
ধোঁয়ায় চোখ জ্বালা করছিল ওঁর
শবদেহের কিউ কালকে সকাল থেকে
রজনীগন্ধারা শুকিয়ে ন্যাতানো
অ্যামবুলেন্স চালকেরা দিনে ষোলো বার
রোজগারের সুযোগ এসেছে বহুকাল পর
রশ্মির স্বাহা খেলছে আপাদমস্তক
এতো দেরি কেন
নিমপাতার প্যাকেট কিনতে গিয়েছিল
পর পর সহমরণের লাইন দিয়েছে দেখছেন
মুদ্দোফরাসের লোহার অভ্যস্ত বাড়ি
খুলির ওপরে
ব্রহ্মাণ্ড ফাটার আওয়াজ
আগুন চমক দিয়ে নিজস্ব উড়াল নেয়
সাতজন আত্মীয় নেই বলে কবি
নিজেই প্লাস্টিকের কলসি ভরে জল দেন নিভন্ত আগুনে
পাথর, জল, গোবর, সাদা সরষে,
লোহা, মটর ডাল প্লা্টিক প্যাকেটে
কিন্তু কবির তো বাড়ি নেই
আত্মীয়-স্বজন নেই, জ্ঞাতি-বন্ধু নেই
তিনি তো নিজেই নিজের পুরোহিত