রাঙামাসিমার গোপন ডায়রির শেষ পাতা
“ও চেয়েছিল গায়িকা, ঠোঁট দিয়ে, জিভ দিয়ে, গায়িকারা যা করতে পারে
দাঁত কেমনভাবে ব্যবহার করতে হবে, শ্বাসটানা, তখন ফুঁ-প্রেম শুনিনি
স্বরলিপিতেই শ্বাস যাবে-আসবে, খানিক ফিসফিসুনি টাকরা-আলজিভে
পুরাণের হিরোদের মতন পাইকারি ভালোবাসা, লোকটা জ্ঞানকুঁজো
কতো বছর যে মায়ের মগজে ঘুমিয়েছিলুম, পাঁচবারের বার জন্মালুম
পালতোলা বাড়ির তিনতলায়, পেটে থাকতে জ্ঞান প্র্যাকটিস করেছি
ঘরজুড়ে বিকেলের দিকে ছায়াদের অডিশান ছুরি-কাটা আলোয়
চাটা-ফাটলের হাঁ-মুখে রক্ত গরম হতে থাকে, দুঃখের কথা বলতে
পাকস্হলীতে গানের শীতঘুমের ঋতুতে কুমিরদের মেটিং মৌসম
ট্রেনভর্তি মানুষ নামছে বুক চিরে-চিরে ঘেমো মেয়েদের গাদাগাদি
ওদের বংশে পারিবারিক জিভের গপ্পো খুব শুনতুম, ও, এই ব্যাপার
যেন নাক ডাকার সময়ে মুখের ভেতরে ফেলা পাঁচ টাকার কয়েন
সিজারিয়ান করে ঝকঝকে অ্যালুমিনিয়াম পাহাড় প্রসব করল
কথা কইবে যেন অন্ধের ছড়ি ফুটপাথের সঙ্গে আলাপ করছে
বাড়িতে অভিধান বলতে ভাশুরপোর দ্বিতীয় পক্ষের বউ আর
আগের পক্ষের মেয়ে হাতের রেখায় যতোটুকু ব্যাকরণ রয়েছে
সিনেমাহলে ফেলে-যাওয়া গাদাগাদি ছোঁড়াছুঁড়িদের বদঘাম
বোতাম-সভ্যতা চলছে তখনও, জিপ-সংস্কৃতি বাজারে নামেনি
অমাবস্যার রাতে কাতলামাছের আঁশে-গড়া হাওয়া খাচ্ছিলুম
ও বললে, শরীর একখানা উপমহাদেশ আমার মনে পড়েছে
শীতকালেও গায়ে এমন গ্রীষ্ম ছুঁড়ে মারত মলম লাগাতুম
এদিকে মাঝরাতেই শ্বাসে-শ্বাসে বিছানার অন্ধকার গাঢ় করেছে
ভাগ্যিস শুতে আসার আগে পাকা পেয়ারাখানা খেয়েছিলুম
কী মষ্টি কী মিষ্টি এই নাহলে ভরাসংসার শ্বশুরবাড়ি...”
( কবিতীর্থ পত্রিকার অক্টোবর ২০১৬ সংখ্যায় প্রকাশিত )
No comments:
Post a Comment