Thursday, 30 April 2020

কারে বোধি কয়

কারে বোধি কয়
অবন্তিকার পিতৃকুলে কেহ নাই, শৈশবে মরিয়া গেছে মাতা
সংসারত্যাগী পিতা ফেরে নাই
কোথায় গিয়াছে না জানিয়া, কী করিয়া বলেন ফেরে নাই
যাইবে তবে তো ফিরিবে, নৌকায়, ট্রাকে, ট্রেনে, পদব্রজে
পাশে কি যশোধরা নাম্নী স্ত্রী ও সন্তান ছিল
নাকি কাটিয়া পড়িয়াছে কপিলাবস্তুর রাজপুত্রের পিছু
বোধিলাভ ঘটিয়া থাকিবে, হয়তো তিনি জানিতেন
বোধিলাভে আধুনিক জীবনে কোনো লাভ নাই
কিন্তু এও মহা বিড়ম্বনা
বোধিলাভ হইয়াছে কি না, এবং হইয়া থাকিলে
ঢক্কানিনাদসহ জনেজনে প্রচার করার প্রয়োজন
আমরা কি জানি ফুটপাথে দড়িদঙ্কা পড়ে থাকা ভিখারিনী
বোধিপ্রাপ্তির পর পথপার্শে শুইয়া রহিয়াছে
মিউনিসিপালিটির ডোম বুঝিবে কেমনে ? ভিখারিনী
মহাপরিনির্বাণের পর পঞ্চভুতে বিলীন হইতে চাহে নাই !
কিংবা মর্গে রাখা বেওয়ারিশ লাশ যার দেহ বিক্রয়ের জন্য
ডোম ও ডাক্তার দরাদরি করিতেছে
ডাক্তারি শিক্ষার জন্য কঙ্কাল দুষ্প্রাপ্য আজ
হয়তো কোনো ডাক্তারি কলেজে পিতা অবন্তিকার
দণ্ডায়মান কাঠের বেদিতে শ্বেতশুভ্র কঙ্কালরুপে
অবন্তিকা শুনিয়া কহিল, ছ্যাঃ, এখন সেদিন আর নাই
বোধিপ্রাপ্তির মতো মানুষ পয়দা হয় না আর
এখন কেবল সঙ বহুরুপি দলদাস চশমখোরের সমাবেশ
ফর ঠিকেদার অফ ঠিকেদার বাই ঠিকেদার মহাবোধি
বিপ্লবের ভানসহ গদি দখল করে, কোতল উৎসবে মাতে
কেহ বলে পলাইয়া গিয়াছে বাপ, নকশাল দলে
কেহ বলে মৃত, নকশাল দলে মাথায় গামছা বাঁধা
ধরা পড়িয়াছে, কাঁধে সাতচল্লিশ রাইফেল
অগুস্তো পিনোশের সেনা চিলিতে লোপাট করিয়াছে
জেসি ইভান্সের ন্যায় গুড ব্যাড আগলি ফিল্মের
গুড লোকটির মতো স্বর্ণমুদ্রাসহ হারায়ে গিয়াছে
অথবা স্পার্টাকাসের দলে যোগ দিয়াছিল পিতাবাবু
আরজেনটিনার নোংরা যুদ্ধ লড়তে গিয়েছিল নাকি
মেশিনগানের আবিষ্কর্তার মতো নাম পালটায়ে
হিরাম ম্যাক্সিম নামে ফিরিয়াছে, কিন্তু গৃহে ফেরে নাই
আওয়ামি লিগের দলে বিএনপি দলে যোগ দিয়াছিল হয়তো বা
কখন কে উঠে চলে গেছে জানতে পারেনি কেউ
১৮৫৭ সালে নানা সাহেবের সঙ্গে ছিলেন কি তিনি
কাকরূপ পাইয়াছে, কিংবা হায়েনার দলবদ্ধ র‌্যালিতে
মাটিতে নোলা সকসকসহ টাটকা রক্তের গন্ধ খোঁজে
হয়তোবা স্ফিংকসের ঢঙে নাসিকাবিহীন দেহে
কোনো মরুপ্রান্তরে পর্যটকের জন্য যুগযু্গ বালুকাশীতল
মালয়েশিয়ার প্লেনে জলের ভিতরে গিয়া লীলা করিতেছে
রঙিন মৎস্যের ঝাঁকে হাঙরের বাঁকে, পেংগুইন দলে !
এভারেস্টগামী দলে তাঁকে দেখা গিয়েছিল, ডেনিম-পতাকা
পাপারাৎজিগন তাঁকে লিপ্সটিকঠুঁটো হাফনগ্ন ফিল্ল্মিনারীর
কোলে আঙুর খাইতে দেখিয়াছে, কালো আর সবুজাভ
কতো কতো কোলাহল সহ্য করিয়াছে অবন্তিকা
নিরুদ্দেশ পিতার উদ্দেশে
পাড়াপ্রতিবেশীদের মুখগুলি চিরতরে বন্ধ করিবার জন্য
অবন্তিকা গয়ায় শ্রাদ্ধশান্তি করিয়াছে
কহিয়াছে যাইতে দিন, অমন বাপের জন্য শ্রাদ্ধই যথেষ্ট
আমি বলি, যাহা হউক, উনি পিতা, জন্ম দিয়াছেন
আই মিন জন্ম দিতে ওনারও ভূমিকা ছিল
আমি ওর মাতুলালয়েতে যাই, মাউন্ট রোডে, বিশাল বাগানঘেরা
কুকুরের ঘেউ-ঘেউ মুখরিত, বারান্দায় যে বৃদ্ধ ইংরেজি
সংবাদপত্রে নাসিকা ঠেকাইয়া খবরের দুর্গন্ধ আহরণ করিতেছিলেন
তাঁহাকে আত্মপরিচয় দিই; তিনি, হাস্যমুখে আমার পিতা ও
পিতামহ কোথাকার, ঘটি না বাঙাল,
জানিবার পর, কহিলেন, ইলিশ খাই নাই কতোকাল,
জল পান করিবে কি ? স্টেনলেস স্টিলের গেলাসে আপত্তি নাই তো ?
আজকাল পিতলের যুগ নাই, আমাদের কালে ছিল, পুরাতন হইয়া গেলে
চারশো টাকায় কিলো, ব্যবহৃত স্টেনলেস  কেহই কেনে না
ব্যবহার করো আর ত্যাগ করে চলে যাও
কি যে ছিরি আজকালকার প্রেমে, একজন থেকে আরেকে
ছেড়ে যদি চলে গেলি, বোধিপ্রাপ্ত হলি ? বোধিপ্রাপ্ত হলি যদি
চেলা সংগ্রহ করে মঠ খুলে নিজের মূর্তি বসালি ?
বৃদ্ধকে আমি বলি, বিবাহ প্রস্তাব লইয়া আসিয়াছি
সে বিষয়ে আলাপ করিতে চাই, উনি জিজ্ঞাসেন, মাঠেতে বসিয়া
চিনাবাদাম খাইয়াছ ? সিনেমা দেখিয়াছ দুইজনে ? রেস্তরাঁয়
হাসাহাসি করিয়াছ ? কফিহাউসে লইয়া গিয়াছিলে ?
অবন্তিকার মামা দুই হাতে চেনে বাঁধা দুইটি কুকুর সহ
ঠোঁটে চুরুটের ধোঁয়া, প্রবেশ করিয়া বলিলেন,
ও তুমিই বিবাহপ্রার্থী ! শুনিয়াছি, ভালোই রোজগারপাতি ;
অভিভাককে বলি, রোয়াব প্রদর্শন করিব বলিয়া
ইংরেজিতে বলি, আপনার ভাগ্নিকে আমি বিবাহ করিব
অবন্তিকার মায়ের মধ্যম ভাই জিজ্ঞাসা করেন
ভাগ্নি ? কোন ভাগ্নির কথা বলিতেছ ?
যাহাকে আমরা দিব অথবা যাহাকে চয়ন করিয়াছ তুমি নিজে !
মনে মনে দুই-চমক ভাবি, অন্যগণকে দেখিয়া লইব নাকি
কে বেশি সুন্দরী ? মাতুল জানিতে চান, প্রেম করিতে্ছ ?
না না না না, প্রেমে পড়িবার আগে বিবাহ সারিয়া লইতে চাই
অযথা সময় নষ্ট করিতে চাহি না
হাহা-হিহি, চিনাবাদাম, চিংড়ি কাটলেট, ময়দানে পা ব্যথা,
ভিক্টোরিয়ায় গিয়ে ছাতার আড়ালে চুমু খাওয়া
ওসব চাই না আমি, জাস্ট বিয়ে করে ফেলতে চাই
দুজনে দুরকম চিন্তার আগে । মাতুল কহেন, রাইফেল কখনও
চালাইয়া পরখ করিয়াছ, এই দ্যাখো, আমার রাইফেল-স্টক
বুলেট, প্রোজেকটাইল, যা চাই চালিয়ে দেখতে পারো
কই দেখি, ওই উড়ন্ত পায়রাগুলির মাঝে একটাকে মারো দেখি ।
রাইফেল লইয়া আমি দুই চোখ বন্ধ করিয়া
ট্রিগার টিপিলাম । কী ফল হইল জানি না, উনি বলিলেন
গুড, ওয়েল ডান, মা-বাবাকে টেলিফোন করে দাও
আগামী সপ্তাহে বরযাত্রীসহ চলে এসো ।
বিবাহসভায় দেখিলাম, জনৈক ভিখারি, বুঝিলাম
বোধিপ্রাপ্ত ইনি, বলিলেন, আমি অবন্তিকার বাবা
তোমাকে আশীর্বাদ করিতে আসিয়াছি
বিগত কয়েকদিন তোমার উপরে নজর রাখিয়া
বুঝিয়াছি উপযুক্ত পাত্র তুমি
সত্যকার যেদিন মরিব সেদিন খবর পাইবে
সেইদিন আরেকবার শ্রাদ্ধ করিও, হ্যাঁ, আরেকবার
অগুস্তো পিনোশের দেশ হইতে অথবা পলপটের মাটি ফুঁড়ে
সমুদ্রের তলদেশ থেকে, স্পার্টাকাসের দল থেকে
নানা সাহেবের দল থেকে, ফিরিয়া আসিব.....









   

অবন্তিকার কমপ্লেকসিটি

অবন্তিকার কমপ্লেকসিটি
শ, যে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, অবন্তিকার  প্রেমিক নং ১, ইংলিশ
          মিডিয়াম স্কুলে পড়বার সময়ে ওর সঙ্গে ইংরেজিতে
          প্রেম করতো ।
শ-এর বাবা জ ( দুই ) ফরাসিদেশ থেকে হটেনটট ভেনাসের যোনি
          কিনে এনেছিলেন ( কথিত আছে )।
জ ( এক ) যিনি অবন্তিকার মেশোমশায়, তা জানতে পারেন, শ-এর
          বাড়ি যেতে বারণ করে দ্যান।
অলোকনন্দা গোস্বামী দোলের দিন রঙ খেলতে চায়নি বলে শিফন
          শাড়ি পরেছিল।
অবন্তিকার খুব ঈর্ষা হল, শিফন শাড়ি দিয়ে অলোকনন্দার মাইয়ের
           খাঁজ দেখা যাচ্ছিল ।
জ ( দুই ) নামকরা পেইনটার, উনি কেবল যুবতীদের খাঁজ আঁকেন,
           কলকাতার কালবৈশাখিতে অনেকের খাঁজে জল চুয়েছিল
অবন্তিকার মনে হতো প্রেম কেবল মাতৃভাষায় সম্ভব, একদিন  
          অ্যানাইস নিনকে লেখা হেনরি মিলারের চিঠি পড়ে বুঝতে
          পারলো যে শ বই থেকে টুকলিফাই করেছিল ।
ক্লাসটিচার সিসটার ব ( এক ) আয়ারল্যাণ্ডে ফিরে গেলেন, তাঁর
          বদলি টিচার কেরালার, সিসটার আইয়াক্কম ।
জ ( দুই ) কেরালার টিচারকে বাইবেল উপহার দিলেন, যাতে কালচে
         খাঁজ আঁকতে পারেন ।
অবন্তিকা ২নং প্রেমিক খ ( তিন ) এর দিকে ঝুঁকলো, কেননা
          সে স্কুলে বাংলায় প্রথম হতো আর অবন্তিকার মেসোর
          ওপন হার্ট সার্জারির খরচ দিয়েছে।
প্রতিদান হিসেবে অবন্তিকা খ ( তিন ) কে ব্লাউজে হাত ঢুকিয়ে
          টিপতে অনুমতি দিয়েছিল ( আহা কী আনন্দ )।
মিস্টার শৈলেন বোস মারা গেছেন । মিস্টার অজিত গাঙ্গুলিও।
         অবন্তিকা ওনাদের নাম শোনেনি ।                          
দ ( দুই ) এর দপতরে শ চাকরি করতে গেল ; খ ( তিন )
          ইটালির একজন ছাত্রীর সঙ্গে চলে গেল বিদেশে ।
প্রেম সম্পর্কে অনির্বাণের কোনো ধারণা গড়ে ওঠার আগেই র-নামের
          স্কুল থেকে সে দ-নামের কলেজে ভর্তি হবার পর অবন্তিকা
          যাকে সবাই অবু বলে ডাকতো, পরিচয়ের প্রথম দিনেই বললে
          আমি ডেটিং-ফেটিং করি না।
অনির্বাণ, যে জ ( দুই ) এর জারজ ছেলে, উত্তরে বলেছিল, আমিও
          ফাকিং-সাকিং করি না । বেচারা ন্যাড়া বোষ্টম হয়ে গেল।
“মেয়েদের মাসিক প্রকাশ করা উচিত নয়”, সাইনবোর্ডে লেখা, তলায়
          পেইনটিঙ, জিনস-পরা যুবতীর মাসিক হবার রক্ত লেগে।
           পত্রিকার নাম ‘আরেত্তেরি ইস কি মা কা আঁখ’ ।
পড়ার পর অবন্তিকা নিজের পাছায় হাত দিয়ে চেক করে নিল। নেই।
          যুবতী সাইনবোর্ড থেকে নেমে জিগ্যেস করল, পাতা ফুঁকবে?
মইনুদ্দিন খানের কাঁধে হাত রেখে জ ( এক ) নির্বাচনে কজন মারা
          গেছে তা আলোচনা করতে-করতে গেল।
কালবৈশাখির মেঘ একটু একটু করে জমা হচ্ছে, ছাতা আনেননি
          কেরালার টিচার, ওনার খাঁজ অতিপবিত্র, দেখানো যাবে না
          বৃষ্টির জল তা মানতে বাধ্য নয় ।
শ একদিন জানতে পারলো তার বাবা জ ( দুই ) যাকে হটেনটট
          ভেনাসের যোনি বলে সকলকে ঈর্ষায় পুড়িয়েছেন তা আসলে
          ফরম্যালিনে চোবানো বড়ো বাদুড়
খবরের কাগজে সংবাদটা পড়ে ম, যার সঙ্গে স্নাতকোত্তর পড়ার সময়ে
          অবন্তিকার পরিচয় হবে, নিজেকে বলেছিল কি লজ্জা কি লজ্জা
          মরা বাদুড় দেখেও লিঙ্গোথ্থান হয় ।
অনির্বাণ বোষ্টম হয়ে এক সুন্দরী বোষ্টমীকে ফাঁসিয়েছে, কী কুক্ষণে যে
          লটারির টিকিট কিনেছিল দশ লক্ষ টাকা পেয়ে চুল গজালো।
অবন্তিকা একদিন ম-কে কাফে কফি ডে-তে বললে যে ওর একটা মাই
          কেউ এখনও টেপেনি ।
ম বলেছিল, চিন্তা করিসনি, আমি টিপে দেবো । ম এমনই চরিত্রহীন যে
          তার আগেই শ-এর খুড়তুতো বোনের মাই টেপার অফারের
          সদ্ব্যাবহার করে ফেলল।
খবরের কাগজের উত্তর সম্পাদকীয়তে হটেনটট ভেনাসের আসল যোনি
          আর জ ( দুই )-এর বাদুড় যোনির তুলনা প্রকাশিত হলো।
পেইনটিঙের সমালোচকরা আবিষ্কার করলেন জ ( দুই ) এর খাঁজের
          তেলরঙগুলো আসলে বাদুড়দের ছবি ।
ম একদিন অবন্তিকাকে প্রস্তাব দিল যে পূর্ণিমার রাতে সেন্ট্রাল পার্কের
          ঘাসে ফুলশয্যা করা যাক ।
ম-এর মা ট ( দশ ) পার্কে সঙ্গমরত দুজন মানুষকে ভাবলেন ভুত আর
          ভুতনির অষ্টাঙ্গদশা, দেখেই দুহাত তুলে দৌড়োলেন ।
ম-এর বড়ো ভাই প ( এক ) মাকে দৌড়ে আসতে দেখে সাপ মারার
          লাঠি নিয়ে পার্কে ছোটোভাইকে দেখে চটে গেলেন।
ম-এর মা ট ( দশ ) বড়ো ভাই প ( এক ) কে স্তোক দিলেন যে তোকে
          তিনচারটে মেয়ের সঙ্গে একই দিনে বিয়ে দেবো।
ট ( দশ ) এর ছোটোবোন ট ( নয় ) যে জ ( এক )-এর ডিভোর্সি বউ
          তা কেবল অবন্তিকা আর ম জানতো।
ট ( নয় ) ম-কে বললেন, ঘাসে লীলেখেলা করিস কেন রে, হাঁটু ছড়ে
          যাবে, আমার বাড়ির ব্যবহার-না-করা বিছানা তো ছিলই।
ট ( নয় ) এর ব্যবহার-না-করা বিছানায় লিলেখেলা করার সময়ে ম-কে
         অবন্তিকা বললে, তুমি আমার প্রেমিক নং ১৮ ।
ম অবাক হলো যে এর আগে সতেরোজন প্রেমিক কি বিছানার চাদরে
         রক্ত মাখাতে পারেনি !
অবন্তিকা ম-কে জানালো যে জ ( এক ) যিনি ওর মেসোমশায় তিনি
         এই শহরের ভার্জিনিটি রিপেয়ার বিশেষজ্ঞ ।
শ, যে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, জ ( এক )-এর ভার্জিনিটি রিপেয়ারের
         হিসেব রাখে, তার কাছ থেকে ম জানতে পারলো যে এই শহরের
         প্রতিটি ভার্জিনের ভার্জিনিটি রিপেয়ার করা ।
জ (এক ) আর জ ( দুই ) দুজনেই তাঁদের স্হাবর-অস্হাবর সম্পত্তি ম
         আর অবন্তিকাকে লিখে দিয়ে গেছেন ।
ম আর অবন্তিকা ছেলে মেয়ে বউ জামাই নাতি নাতনি নিয়ে এখন সুখে
         থাকার চেষ্টা করে অথচ পারে না ।
         
         

























Monday, 27 April 2020

মৃত্যু - একটি আভাঁ গার্দ কবিতা

মৃত্যু - একটি আভাঁ গার্দ কবিতা
মৃত্যু কি ক্রিয়া ?
মৃত্যু কি ক্রিয়াপদ ?
মৃত্যু কি বর্তমানকাল ?
মৃত্যু কি অতীতকাল ?
মৃত্যু কি বিশেষণ ?
মৃত্যু কি বিশেষ্য ?
মৃত্যুর সংজ্ঞা আছে ?
মৃত্যুর মুহূর্তই কি মৃত্যু ?
মস্তিষ্কের মৃত্যুই কি মৃত্যু ?
হৃৎপিণ্ডের মৃত্যুই কি মৃত্যু ?
উত্তর রয়েছে প্রতিটি মৃতের কাছে !

Sunday, 26 April 2020

টু-পাইস ফাদার-মাদার প্রকল্প - একটি পোস্টমডার্ন কবিতা

টু-পাইস ফাদার-মাদার প্রকল্প -- একটি পোস্টমডার্ন কবিতা
উৎসর্গ : বিদিশা সরকার
১.
অ্যানোফিলিসের জাফরিকাটা আলোয় যখন আপনি জানেনই যে
যাদের সঙ্গে পর্যটনে বেরিয়েছিলুম
তাদের সবাই দিনকতক পর এমন অসহ্য
ওফ বলে বোঝাতে পারব না
অন্ধকারের খাঁজে-খাঁজে উই -- আন্টি-আঙ্কেলের গলাগলি ;
ভাগ্য ভালো যা অতীতের শীতবর্ষা ভুলে গেছি, নইলে পিঠে যত কুঁজ
তত বুদ্ধি তত বেনাপোল তত গুদামজাত ষোড়শী
২.
আমার তো কীবলেগিয়ে বাতাসের উপরিতলটা বাধো-বাধো ঠেকছিল
তবু আপনি যখন বললেন অল্পবয়স্কা এনজিও তায় শিশুকন্ঠ
জলের ভেতর মৃগেলটাকে দুহাতে দুহাতে ধরে রাখতে পারছেন না
ভাবলেন মূল্যও আবার ন্যায্য হয়, অ্যাঁ ? ন্যায় বড়ো দয়ালু --
তা উপরি পাওনা যে কাউকে চিনি না, তাই ঘাড় কাৎ করলেই হ্যাপা চোকে
আমাদের তো বিক্রিযোগ্য সংসার
শুকনো বরফের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হবার যোগাড়
৩.
তলব পেলেই যাদের কাছে যেতে হয়
এমন গোঁফ বেরোনো জামরুল সায়েব
আরকী বলব বলুন, সবই তো পুরোনো মনে হয় আর অননুকরণীয়।
কালকের ফ্যাক্সে ৩০০ বছর আগের বাংলায় প্রেমপত্র এলো
সেটা কিন্তু চিঠি নয় -- প্রেমপত্র কখনও চিঠি হয় না --
দুর্দিনের আঁচড়-কামড়সহ অতিপ্রাকৃত ফর্সা মহিলা
মহিলা ছাড়া আর কী ? 
যাঁহা বাহান্ন তাঁহা তিপ্পান্নর টিভি-বিদুষীর 
প্রাগাধুনিক বুকের ফর্ম আর কনটেন্ট, যত্রতত্র ব্যবহারের ইয়াংকি সাবান !
৪.
যারা খবরের কাগজ পড়ে 
সাতসকালে ফুসফুসে দুঃখ বা উল্লাসের জেলি বানায়
কোনো মানে হয় না, যা ফালতু তা অবিনশ্বর
রাস্তার মোড়ে আখেরে পছতাচ্ছে ব্রোনজের আলোকপাতি স্ট্যাচু
মানে মূর্তি, যান দেখুনগে যান খাটের তলায়
হলদেটে বঙ্কিমোত্তর পত্রিকায় স্মৃতিমাতাল সিংদরোজার সামনে
হাঁ-করা ভিড় কেতাথ্থ করছে
৫.
সন্ত্রাসে হাউম-হুম আদর্শে জলপাই ছেলেছুকরি
আজকাল তো সারা বছরই পৌষমাস
চোখের পাতায় অতিবেগুনি মায়া
তৎসহ ঠোঁটের দুকোণে তথ্যের ফেনা
আপনাকে ভাবতে হবেনা তো অত
জানেন তো প্রথম স্পর্শই হল ইররররটিক !
৬.
এই মাত্তর আলকাৎরায় স্নান সেরে উঠলেন বোকাবোকা চাউনির সাংসদ
জানতে চাইছেন আমরা কিসের বিরুদ্ধে ? কার বিরুদ্ধে ?
আমাদের খাঁচায় নার্ভাস ফড়ফড়ানি চলছে ।
গুছিয়ে বলব কিন্তু স্পষ্ট বলব না ।
মিছিল করব কিন্তু নিরক্ষর পথশিশুদের পড়াব না ।
যা প্রাসঙ্গিক তা বুজরুকি, যেই না বলিচি
ওমনি সেই পুনঃপাঠ বিশেষজ্ঞ : রুবলহীন মালেবাদ --
ডুকরে ওঠার অধিকার ফিরিয়ে দাও ! ভেবে দেখুন অ্যাগবারটি
ডলারে বদলযোগ্য জোনাকিগুলো
মশারির ওপর ঝরে পড়ছিল ছাদপাখার ঝাপটায়,
আর হাতের তালু বলতে হিমঘর । তাছাড়া
অন্নাদ ভবন্তি ভূতানি পর্জ্জন্যাদ অন্নসম্ভবঃ । পরের লাইনটা কী যেন ?
যজ্ঞাদ ভবতি পর্জ্জন্যো যজ্ঞঃ কর্ম্মসমুদ্ভবঃ ।ঠিক তো ?
৭.
ঘর্ষণের অপেক্ষায় দেশলাইকাঠির কাছে আগুন চাইতে শরীর দিয়েছে জল
আপনিই তো বলেছিলেন
“যারা যে রেটে বিয়োচ্ছে তারা সেই রেটে গরিব হবে”
জিভ কাঁপাবে সদর-হাটকরা নেকড়ের মধ্যাহ্ণ
ইতিমধ্যে ব্যাটন রেখে হিসি করতে গেছেন পুলিশ কনোসটেবুল
কিন্তু পাবলিকের মগজের মধ্যে সজারু…
দ্রুত শ্বাস ফেললে যদি অবস্হান টের পায় ?
অপব্যবহারযোগ্য অন্ধকারে ভয়ে ধোঁয়াটে
আপনার আগাছা-ঢাকা মুখশ্রী
ভবি না ভুললে যাবে কোথায় !
ফলে ধমনীর তিতকুটে রক্ত পালটাবার আমাদের দায় নেই
৮.
জাল নিজেই মাছেদের সামলাবে---
আমরা কোথাকার কে ? পুবদিকটা জানলেই কোনদিকেউত্তরমেরু
কাবার হয় । হয়ও না । আমার বাবার অপরপক্ষের মেয়েরা
যারা বাগদত্তের বোবা ফিঁয়াসি
মোমেজোড়া কাঁধের পাখনা মেলে গিয়েছেন তাম্রলিপ্ত
পড়বি তো পড় একেবারে নৈশবিভাগের ঠুমরিবিজ্ঞানের
শিক্ষকের বচসাকে কেন্দ্র করে চালু ঝগড়ার মাঝে
৯.
ওহে, কোলাকুলিরও ধর্মমোতাবেক পাঁজি হয় দিনক্ষণ হয় পোশাক হয়
মোলেও যাবে না খিনখিনে স্বভাব, এই না হলে কর্তাবাবা ? অ্যাঁ ?
উৎপাদনের পুঁজি উবে এয়েচে ভুতুড়ে পুঁজি
নকশার জায়গায় আকস্মিকতা
একটিমাত্র করণীয়ের বদলে একসঙ্গে অনেকরকম কাজ
কী আর বলব বলুন, আমার তো দাড়ি পেকে যাচ্ছে ।
১০.
এই ফাঁকে বলি : শহিদ হওয়া নাকি ভালো
তাই পাবলিক পিটুনির শহিদ, পুলিশে ঠ্যাঙানো শহিদ
অন্তত দেড় বাই দেড় বাই আড়াই গাঁথুনি দেখতে
বৃষ্টি এয়েচে তিন দিনের সফরে ।
এক গ্যালন তেলে ভালোই আত্মহত্যা হয়, কী বলেন স্যার ? 
শ্বশুরটাতো ফৌজদারির অ-কূল পাথরে
পড়তায় পোষালো না বলে আইন করে আইনের সজ্ঞা বদলাতে হল
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে জলাশয়ের সে কি কান্না
একেবারে আছাড়িনাছাড়ি
তারকাখচিত আকাশ বলতে মশারি-চালের জোনাকি
জীবনটা ওতেই চলে যাবে….
৪-৭ জুলাই ১৯৯৬


বং

বং
উৎসর্গ : অনুরাধা মহাপাত্র
গোড়ালিতে পাক খেয়ে 
জগতসংসারটাকে দেখি
খেলা হোক যুদ্ধটাও হোক বলতে-বলতে
চলে গেলেন গাড়ু-গোবিন্দের বাপ
খেলাটায় পেপসি আর কোকাকোলা আছে
তাছাড়া বোমাতো বনগাঁয়ে পড়ছে না
.
আমাদের যুদ্ধহীন কুচকাওয়াজ
চলছে তো পাড়ায় পাড়ায়
ক্লাবে পঞ্চায়েতে কিংবা অ্যামপিফ্লায়ারে
বীর্য না থাকাটা এক ধরণের শৌর্য
গোড়ালিটা পাক খায় বটে
তবে জগতসংসার দেখি ধুঁধলা আর থির
২১ জুলাই ১৯৯৯

আইরিস গাছ, রাইজোম

আইরিস গাছ, রাইজোম
উৎসর্গ : বারীন ঘোষাল
চ্যালেঞ্জ বিক্কিরির দোকান থেকে আমরা সবাই
          কিনেছিলুম একটা করে থ্যাঁতলানো চোটের ঢেউখেলানো ব্যথা
পেঁয়াজের লেস-বসানো অমলেট তিনশো বছরের হলুদ কলকাতার
          সামনে দিনটা পেছন দিক হয়ে গিসলো চ্যালেঞ্জের দোকানে পড়ে পড়ে
যে বাড়িটা গলিটাকে কানা করেছে সেটাই যে চ্যালেঞ্জের দোকান
          তা শালগ্রামশিলার অপরাধবোধে কাহিল অলস ব্যথাগুলো
পাগলাঘণ্টি চুরি-যাওয়া জেলের ছায়ায় কানায় কানায় লেগে
          গোধূলি হাশাপ করে ফেলেছিল কালো প্রজাপতিদের স্কোয়াড্রন
চ্যালেঞ্জের যে জবাব দেবে তা প্রার্থনারত আঙুলের জট ছাড়াতেই তো
          ভাড়াটে-অধ্যুষিত বঙ্গসংস্কৃতির একশা
কিন্তু পোস্টমডার্ন মাঝরাতে ব্যথার মোড়ক খুলে দেখতে পাচ্ছিলুম
          বউল আসায় বেশ রিল্যাক্সড মুডে হিমসাগর
২৫ মে ১৯৯৮


শহিদ, দুরকম

শহিদ, দুরকম
উৎসর্গ : দেবারতি মিত্র
ম্যানহোল খুলে দ্যাখে ওই গর্তে ছায়াপথ, বিষাক্ত গ্যাসে
সৌন্দর্য-পিপাসী দুই ঠিকাকর্মী, খর্বকায়, মুচমুচে তাজা
আচমকা শ্বাসরুদ্ধ । গু-মুত-জঞ্জাল বাদ দিলে
জীবন কারোর কাছে মাথা নত করে না কখনও ।
মৃতদের নাম কারো জানা নেই । নেমেছিল যে বন্ধুটি ওদের বাঁচাতে
সেও অসুস্হ, কাৎ । হাসপাতালের পথে, থানে-ঢাকা সৌন্দর্য পূজারি
মুখ বুজে পা নাচায়, কেননা এরও আগে বহুবার বহুদিন
এরকম ঘটনা ঘটেছে । প্রমাণ হিসেবে নানা অলিতে-গলিতে
নর্দমার ধারে কাছে শহিদের বেদি পাতা ; স্বর্ণাক্ষরে আত্মত্যাগ করেছিল
তাই সরে যেতে হল, ক্ষতিপূরণের অঙ্ক বাড়ানো গেল না, ওঁরা অপারগ
লাগাতার মূল্যায়নে বোঝা গেছে এটা, দায়িত্বে ব্যর্থ হলে সকলেই নির্বিশেষ
সৌন্দর্যের এটাই নিয়ম ।
১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫

কী হয় কী হয় কিংবা রেখো মা দাসেরে - একটি পোস্টমডার্ন কবিতা

কী হয় কী হয় কিংবা রেখো মা দাসেরে - একটি পোস্টমডার্ন কবিতা
উৎসর্গ : কৌস্তভীয় গঙ্গোপাধ্যায়
এক
খরাকবলিত বাঁশিবাদক ঢেউ খুলে দেখিয়েছে আমায়
সবে ভয় থেকে বেরোনো নীলরঙে মোড়া প্রশ্নকর্তা
উরু-মখমল তুলে দেখায় কেমন যেন খালি-খালি
শ্বেতপাথরের বাঁ-হাত চুবড়ি-ভরা কাঁকড়া গাদায়
গর্ভপাতের হাড়মাস ভাঙা চৌ-খাটে নতকোমর

দুই
হঠাৎ ভিড়ের মাঝে কেঁদেছি আমি আসলে কেউ নই
পাইপ বেয়ে ওঠা সূর্য ঝাড়লন্ঠন ঘিরে বাদুড়
ডাকপাড়া নারীর সঙ্গে হাসছে জোরে নদী তখন
পোকা মরার যে বৈভব বগলছেঁড়া খেজুরগাছে
চুলের খাঁজে খাঁজে ধোঁয়া দুর্ঘটনায় চোখের পাতা

তিন
পৃথিবীকে আমার হাতে ছেড়ে দিন মড়াবাহক
যেটুকু নারী দাঁতের ফাঁকে ঘাস থেকে তোলা ছায়া নিয়ে
হাতে-বোনা আলোকমালা পোড়া মোবিলের উড়ন্ত ঝুল
সেটুকু চোখ খোলা থাকে মাটির খুরিতে রাখা হাড়
আর কাঠি-খোঁচানো ভোটপত্র চিড়-ধরা কাক-সকালে
২০ আগস্ট ১৯৯৪